উত্তর : আইন অমান্য আন্দোলন চলাকালে বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনের এক স্মরণীয় ঘটনা হল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন ।
চট্টগ্রাম অস্ত্রগার লুণ্ঠনের নেতৃত্ব দেন বিপ্লবী সূর্যসেন । তিনি ‘মাস্টারদা’ নামে বেশি পরিচিত । চরম সাহসিকতা ও বীরত্বের সাথে বিপ্লবীরা নির্দিষ্ট দিনে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করেন । মাস্টারদার সহকারী বিপ্লবীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন নির্মল সেন , অম্বিকা চক্রবর্তী , গণেশ ঘােষ অনন্ত সিংহ , প্রীতিলতা ওয়েদ্দেদার , কল্পনা দত্ত প্রমুখ ।
সম্পূর্ণ চট্টগ্রাম কিছু সময়ের জন্য বিপ্লবীদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে । লুষ্ঠিত অস্ত্র নিয়ে বিপ্লবীরা জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নেয় । এখানে পুলিশের সাথে বিপ্লবীদের তুমুল যুদ্ধ হয় । এর পর পলাতক অবস্থায় বিপ্লবীরা প্রায় তিন বছর কাটিয়ে দেন । এই সময়েও বিল্পবীরা কিছু কর্মসূচি নেন । চন্দননগরে কয়েকজন বিপ্লবীর সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয় ।
প্রীতিলতা ওয়েদ্দদার -এর নেতৃত্বে বিপ্লবীদের একটি দল চট্টগ্রামের ইউরােপীয়দের ক্লাবে হানা দিয়ে একজন সাহেবকে হত্যা করেন ( ১৯৩২ ) । এর পর পুলিশের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাবার জন্য প্রীতিলতা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন ।
শেষপর্যন্ত ১৯৩৩ - এর মে মাসে সূর্য সেন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন । ১৯৩৪ খ্রিঃ ১৩ মে ভারতমাতার এই বীর বাঙালি সন্তান ফাঁসিতে প্রাণ দেন । চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন ছিল ব্রিটিশের বিরুদ্ধে ভারতীয়র প্রথম সুসংগঠিত সশস্ত্র অভ্যুত্থান । ড . রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রথম ভারতীয় সেনাপতি ছিলেন সূর্য সেন ।